ভুল ঠিকানার ভালোবাসা

নীলচোখে জমে থাকা গল্প

পর্ব ১: চেনা-অচেনা এক সকাল

dream world

"যে চোখ একদিন ছিল সবচেয়ে আপন,

আজ তার দৃষ্টি যেন অচেনা শহরের জানালার মতো—

দেখি, কিন্তু ছুঁতে পারি না…"


চট্টগ্রাম, শীতের এক সকালে

নাহিদা জারদারির কাপড়টা টেনে মুখটা একটু ঢাকে। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে, দূরে তাকিয়ে আছে।

সামনে মেঘলা আকাশ, অথচ মনে হাহাকার।

আজ সকালে তার হাতে এসেছে একটি চিঠি।

না, এখনকার নয়।


সাত বছর আগের…

লিখা ছিল—

"তুমি বলেছিলে হারাম ভালোবাসা নয়।

তাই আমি অপেক্ষা করবো, যতদিন লাগে।

আমি যাচ্ছি, কিন্তু ফিরবো—

যদি তুমি বলো, এবার হালাল পথে চলি।

— আবরার"


নাহিদা চিঠিটা পড়ছে বারবার।

চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছে গাল বেয়ে।

সে কখনো ভাবতেই পারেনি, আবরার সেই চিঠিটা লিখেছিল!

সাত বছর… এত বছর ধরে সে ভেবেছে—

আবরার তাকে ভালোবাসেনি।

তাই একদিন কোনো কথা না বলে চলে গিয়েছিল মালয়েশিয়ায় পড়তে।

more.......

ফ্ল্যাশব্যাক: সেই সন্ধ্যা

২০১৭ সাল।

আবরারের হঠাৎ একটা মেসেজ—

"কাল মালয়েশিয়া যাচ্ছি। দোয়া রেখো।"

নাহিদা তড়িঘড়ি উত্তর দিয়েছিল—

"তুমি না জানিয়ে যাচ্ছো কেন? আমায় কিছু বলার ছিল না?"

কিন্তু… কোনো উত্তর আসেনি।

সেদিন থেকেই নাহিদা ভেবেছিল,

আবরার সম্পর্কের কোনো মানে রাখেনি।

তাই সে নিজেও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল।

dream world


একটা ভুল… হাজারটা ব্যথা

আবরার চলে যাওয়ার কিছুদিন পর নাহিদা নিজেকে ইসলামের দিকে মনোযোগী করে তোলে।

হিজাব পরা শুরু করে, লেখালেখিতে ঢুকে যায়।

সে ভাবত—

ভালোবাসা মানেই ভেঙে যাওয়া।

তাই আর কারো দিকে তাকাতো না।


বর্তমান: সাত বছর পর… পুনরায় দেখা

আজ সকালেই ফোন এসেছিল Islamic Media Foundation থেকে।

—“আপনাকে একটা সেমিনারে রেজিস্ট্রেশন টিমে রাখা হচ্ছে। টেক লিড হিসেবে থাকবেন ভাই আবরার হোসেন, মালয়েশিয়া ফেরত স্কলার।”

নাহিদা থমকে গিয়েছিল।

আবরার! সাত বছর পর…!


সেমিনার রুম: চেনা মুখ

ভিড়ের মাঝে আবরার দাঁড়িয়ে।

কঠিন, শান্ত মুখ। চোখে চশমা। দাঁড়িতে হালকা মেহেদি রঙ।

কোনো অতিরিক্ত চোখাচোখি নেই।

না চেনার ভান!

সে এগিয়ে এসে বলে—

—“আসসালামু আলাইকুম, আপনি নাহিদা হোসেন?”

নাহিদা মাথা নাড়ে।

আবরার আবারও জিজ্ঞেস করে,

—“আমরা আগে কোথাও দেখা করেছি?”

এত বছর পর… এভাবে অচেনা হয়ে যেতে পারে কেউ?

নাহিদা দম আটকে আসে।

সে শুধু হাসে,

—“হয়তো।”


রাতের ডায়েরি থেকে

“সে কি ভুলে গেছে?

নাকি ভুলে যেতে চায়?”

“আমি আজও ভুলিনি,

কিন্তু সে কি আমায় একবারও মনে রেখেছে?”

dream world


রের দিন: চিঠির আবিষ্কার

সেমিনারের দিন, এক পুরোনো খাম পড়ে থাকে টেবিলের নিচে।

চিঠির গায়ে লেখা—


প্রাপকঃ নাহিদা হোসেন

প্রেরকঃ আবরার হোসেন | ২০১৭

বিষয়ঃ ‘শেষবার কিছু বলার ছিল’

নাহিদা হাতে নিয়ে খুলে ফেলে চিঠিটা।

চোখ ভিজে যায় কয়েক লাইনের মধ্যে।


“তুমি বলেছিলে হারাম সম্পর্ক চাই না।

আমি তাই সরে যাচ্ছি,

কিন্তু ফিরে আসবো একদিন…

যদি তুমি তখনও বলো,

‘আবার হালাল পথে একসাথে হাঁটি।’”


শেষ দৃশ্য: চোখে জল, মনে প্রশ্ন

নাহিদা চিঠিটা বুকে চেপে ধরে।

চোখের কোণ বেয়ে পানি পড়ে।

সে ফিসফিস করে বলে—

“আবরার… তুমি কি এখনও অপেক্ষা করো?”


পর্ব ২: “ভুল বোঝা, ভুল বোঝানো”

"সবচেয়ে বড় দূরত্ব কি জানো?

যখন কেউ তোমাকে ভালোবাসে… অথচ মুখ ফুটে বলে না।

আর তুমি ভেবে বসো—তোমার কোনো মানেই নেই তার জীবনে।"


সেমিনার হলে, দ্বিতীয় দিন

সকালবেলার আলোয় ঢেকে যাওয়া সেমিনার রুমে আবরার আর নাহিদা পাশাপাশি বসে।

কিন্তু মাঝখানে যেন সাগরের দূরত্ব।

নাহিদার চোখে ভাসছে সেই চিঠির শব্দ,

আর আবরার তাকিয়ে থাকে প্রজেক্টরে,

মনে তার ওলট-পালট চিন্তা।

আজ আর 'না চেনার ভান' নেই,

তবুও চেনার কথাও বলে না কেউ।


চায়ের বিরতিতে, মুখোমুখি এক সাদা সত্য

— “তুমি কি জানো, আমি সাত বছর ভেবেছিলাম… তুমি ইচ্ছে করে চলে গিয়েছিলে?”

নাহিদা ধীরে বলে।

আবরার চুপচাপ কিছুক্ষণ।

তারপর মাথা নিচু করে ফিসফিস করে—

— “আর আমি ভেবেছিলাম… তুমি আর চাওনি আমায়।”

— “চিঠি আমি পাইনি আবরার।”

— “আর আমি কোনো উত্তরই পাইনি নাহিদা।”

দুজনেই চুপ হয়ে যায়।

দুটি নিঃশ্বাস, দুটি ভাঙা সময়, একটি মিথ্যা দূরত্ব—

এই তো, সাত বছর!


নাহিদার চোখে জল, কিন্তু ভিজে না গাল

— “তুমি কখনো ফিরে আসোনি…?”

— “আমি চেয়েছিলাম। কিন্তু ভয় পেয়েছিলাম… তুমি না আবার ফিরিয়ে দাও…”

নাহিদা মুখ সরিয়ে নেয়, যেন মনে হয় কেঁদে ফেলবে।

আবরার আরেকবার বলতে চায়—

"আমি তো আজও তোমাকেই ভালোবাসি…"

কিন্তু বলে না।

কারণ এখনকার সে, আগের মতো আবেগ দিয়ে নয় — ইসলাম দিয়ে ভালোবাসতে শিখেছে।

dream world


তৃতীয় এক আগমন — নতুন বাঁক

দুপুরে Islamic Foundation-এর অতিথিদের সাথে পরিচয়ের সময়,

একজন অতিথি বিশেষভাবে কথা বলেন নাহিদার সাথে।

ড. মাহির ইবনে রাফি,

ইসলামিক স্কলার, ইউটিউবে দাওয়াহ করেন,

বয়সে ছয়-সাত বছরের বড়।

তিনি বলেন—

— “আপনার চিন্তা, লেখনী আর হিজাবি পরিচ্ছন্নতা… আপনাকে আলাদা করে তোলে।

আমি সরাসরি না বলে পারছি না।

আমি বিয়ের জন্য একজন দ্বীনদার সঙ্গী খুঁজছি… আপনি কি ইস্তেখারা করতে রাজি হবেন?”


নাহিদার দম বন্ধ হয়ে আসে

তাকে কেউ এতদিন এত সোজা ও ইসলামিকভাবে কিছু বলেনি।

সে মাথা নিচু করে,

মাথায় যেন ঝড় বয়ে যায়…

এই মুহূর্তেই তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন— আবরার।

আর সামনে… এক দ্বীনদার প্রস্তাব।


আবরারের মুখে প্রশ্রয়, অথচ চোখে শূন্যতা

আবরার সব শুনে কেবল মাথা হেঁট করে দাঁড়িয়ে থাকে।

চোখে একটা চাপা হাসি।

সে বলে না কিছু।

বলতেও পারে না।

কারণ—

সে ভালোবাসলেও কখনো প্রস্তাব দেয়নি।

সে চেয়েছিল— নাহিদা নিজেই বলুক…

“আসো, এবার হালাল পথে ভালোবাসি।”


রাতের ডায়েরি থেকে

“আজ সে ফিরে এসেছে,

কিন্তু আমি হয়তো তার হয়ে ফিরতে পারিনি…”

“আর কেউ, যে দাওয়াত দিচ্ছে দ্বীনের নামে…

আমি কি প্রতিযোগী? নাকি শুধু পরীক্ষা?


dream world

শেষ দৃশ্য: এক কঠিন প্রশ্ন

নাহিদা আবরারের সামনে দাঁড়িয়ে, চোখে তীব্র প্রশ্ন।

— “আবরার…

তুমি যদি আমার জায়গায় থাকতে,

ইস্তেখারা করতে কি রাজি হতে?”

আবরার চুপ।

কিছু বলতে যায়, কিন্তু থেমে যায়।

তার চোখে তখনো সেই একই কথা—

যা মুখে আসেনি সাত বছরেও…

for more.....


পর্ব ৩: “ইস্তেখারার উত্তর, না হৃদয়ের ডাক?”


“ইস্তেখারা মানে শুধু কী করা উচিত তা জানা নয়…

মাঝে মাঝে, এটা হৃদয়কে বোঝার একমাত্র পথ।”


রাতের নীরবতা: ইস্তেখারার প্রস্তুতি

নাহিদা সিজদাহে লম্বা সময় বসে থাকে।

তার চোখে ভাসছে—

আবরারের চোখ, সাত বছর আগের চিঠি,

আর ড. মাহিরের গম্ভীর অথচ ভদ্র প্রস্তাব।

সে জানে—এটা শুধু ভালোবাসার প্রশ্ন নয়।

এটা জীবনসঙ্গীর, দীন ও দুনিয়ার একসাথে চলার সিদ্ধান্ত।



ইস্তেখারার দোয়া

সে ধীরে ধীরে পড়তে থাকে—
“হে আল্লাহ, যদি আপনি জানেন যে এই কাজ আমার দীন, জীবিকা ও পরিণামের জন্য উত্তম, তাহলে আমার জন্য তা নির্ধারণ করুন…”

তার চোখের পানি ঝরে পড়ে জায়নামাজে।


স্বপ্নে এক মেঘলা সকাল

সে দেখতে পায়—

একটা কাচের জানালা।

জানালার ওপারে দাঁড়িয়ে আছে আবরার,

তার চোখে ভরপুর কষ্ট,

কিন্তু ঠোঁটে হাসি।

সে হাত বাড়ায়,

কিন্তু জানালাটা বন্ধ।

পেছন থেকে কেউ বলে—

“যার জন্য জানালা খুলবে,

সে আগে দরজা দিয়ে আসুক…”

dream world

সকালবেলা: জবাব খোঁজার লড়াই

নাহিদা ঘুম থেকে উঠে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকে।

সে কি স্বপ্নে ইঙ্গিত পেয়েছে?

নাকি এটা তার হৃদয়ের ভেতরের ইচ্ছার প্রতিচ্ছবি?

একদিকে মাহির ভাই দ্বীনদার, স্পষ্ট, সাহসী—

অন্যদিকে আবরার, যে আজও মুখ ফুটে কিছু বলেনি,

কিন্তু তার চোখে, প্রতিটি দৃষ্টিতে ভরে আছে না বলা কথা।


এক বন্ধুর সঙ্গে কথা

নাহিদা ফোন করে তার ইসলামি মেন্টর বানু আপুকে।

— “আপু, আমি স্বপ্নে এক বন্ধ জানালা দেখেছি।

আর জানালার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল… একজন।”

— “সে কি তোমার হৃদয়ের মানুষ?”

— “হ্যাঁ… কিন্তু সে কিছু বলেনি।

আর যিনি বলেছেন… তাকে আমি ঠিকমতো জানিই না।”

বানু আপু হেসে বলে—

— “হৃদয়ের যিনি অধিকারী,

সেই যদি দ্বীনের পথে আসে,

তাহলে আল্লাহ কখনো তোমাকে বিভ্রান্ত করবেন না।”

— “তবে কি আমি অপেক্ষা করবো…?”

— “তোমার হৃদয় কী বলছে নাহিদা?”

নাহিদা চুপচাপ, চোখে জল।


আবরারের সিদ্ধান্ত

আবরার সারাদিন চুপ।

ড. মাহিরের প্রস্তাবের কথা সে শুনেছে।

সে জানে— এখন আর দেরি করার সময় নেই।

সন্ধ্যায় সে বানু আপুর কাছে যায়।

অবাক হয়ে দেখেন—সামনে দাঁড়িয়ে আবরার।

— “আপু… আমি একটা ভুল করেছি সাত বছর আগে।

আরেকটা করতে চাই না।”

— “তুমি কি চাইছো তাকে প্রস্তাব দিতে?”

— “আমি চাই… তাকে হালাল পথে জীবনসঙ্গী করতে।

যদি সে রাজি হয়…”


এক চিঠি, এক হৃদয়ের সাড়া

পরদিন নাহিদা তার ডেস্কে পায় এক খাম।

তাতে লেখা—

“সাত বছর দেরি হলো,

তবু আমি এখনও চাই—

তুমি বলো, এবার একসাথে হাঁটি।”

– আবরার

চিঠির নিচে শুধু একটি বাক্য—

“তুমি ইস্তেখারা করেছো। আমি তো শুধু দোয়া করেছি…

কিন্তু তোমার ‘হ্যাঁ’ হবে আমার ইস্তেখারার উত্তর।”

dream world

নাহিদার চোখ বেয়ে শান্তির অশ্রু

সে জানে…

এটা সেই মানুষ,

যে তার ভালোবাসায় ভুল করেছে একসময়,

কিন্তু অপেক্ষায় থেকেছে নিঃশব্দে।

ড. মাহির সম্মানজনক প্রস্তাব দিলেও

নাহিদা বোঝে—

তার হৃদয় কার কাছে চুপচাপ জমা আছে।



শেষ দৃশ্য: মুখোমুখি, অবশেষে প্রশ্ন

নাহিদা আবরারের সামনে দাঁড়িয়ে।

— “তুমি সাত বছর আগে আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলে…

আজ যদি আমি তোমার পাশে দাঁড়াই,

তুমি আর কখনো দূরে যাবে না তো?”

আবরার তার চোখে চোখ রাখে।

নিঃশব্দে মাথা নাড়ে।

— “তবে এসো…

আমরা এবার হালাল পথে ভালোবাসি।”


Click for more....

নীলচোখে জমে থাকা গল্প

পর্ব ৫ (শেষ পর্ব): “যেখানে চোখে জমে থাকে ভালোবাসা”


“আল্লাহ্ যদি কারো হৃদয়ে কারো জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি করেন,

তবে সময় আর দূরত্ব সেই হৃদয় থেকে নাম কেটে দিতে পারে না।”


আক্দের পর, প্রথম সকাল

সাদা কফির কাপ আর ফাঁকা বারান্দায় বসে আছে নাহিদা।

চুপচাপ, কিছুটা বিব্রত, কিছুটা বিভ্রান্ত।

ঘরের ভেতরে আবরার নামাজ শেষ করে আসছে।

আজ তাদের আক্দ হয়েছে—

কাগজে-কলমে, তারা এখন স্বামী-স্ত্রী।

তবুও একটা অনভ্যস্ত দূরত্ব…

হয়তো সাত বছরের অভিমানের কুয়াশা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।

নাহিদার চোখে অদ্ভুত শঙ্কা

আবরার পাশে বসে বলে—

— “আজ আমাদের মধ্যে একটা নতুন সূর্য উঠেছে…

তবে তুমি চাইলে, আমি তোমার কাছে আসতে সময় নেব।”

নাহিদা কিছু বলে না, কেবল হেসে ফেলে।

হয়তো একটু ভরসা পেয়েছে।

আবরারের অতীত—এক খোলা পৃষ্ঠা


dream world

দিন কয়েক পর এক সন্ধ্যায়, আবরার নিজেই বলে—

— “নাহিদা, একটা কথা বলা দরকার…

যা আমি সবসময় চেপে রেখেছিলাম।”

নাহিদা চমকে ওঠে।

আবরার ধীরে বলে—

— “সাত বছর আগে আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম।

তোমার উত্তর না পেয়ে, আমি নিজেকে দোষারোপ করতাম।

একসময় এক মেয়ের সঙ্গে কিছুটা কথা বলতাম,

হালাল না, কিন্তু হারাম কিছু হয়নি।

তবে আমি জানতাম—সেটা তুমি ছিলে না।

আর সেই কারণেই আমি নিজেকে গুটিয়ে নিই…”

নাহিদার চোখে কিছুটা কষ্ট, কিছুটা স্বস্তি।

— “তুমি আমার কাছে সত্যটা বললে, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট।”

— “আমার কোনো অতীত নেই আবরার। আমি অপেক্ষা করেছি… শুধু তোমার জন্য।”

Enter Here.....

এক ফোন কল—এক অজানা ভয়

রাত ১১টা।

আবরারের ফোনে এক অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে।

সে একটু হকচকিয়ে যায়, বাইরে গিয়ে কথা বলে।

নাহিদা দেখে—

আবরার কথা বলছে কাঁধ নিচু করে, মুখ গম্ভীর।

ফিরে এসে নাহিদা জিজ্ঞেস করে—

— “কিছু হয়েছে?”

আবরার উত্তর না দিয়ে কেবল বলে,

— “না, তেমন কিছু না… শুধু পুরনো এক বন্ধুর খোঁজ।”

কিন্তু নাহিদা প্রথমবার মনে মনে সন্দেহ পোষণ করে।

এমনিতেই সে বিশ্বাসের মানুষ,

তবু নতুন সম্পর্কে একটু দ্বিধা স্বাভাবিক।

চুপচাপের মানে হয়ত অভিমান

পরদিন সকালে আবরার দেখে,

নাহিদা একটু গুটিয়ে আছে।

সেই হাসি নেই, সেই চোখের প্রশান্তি নেই।

সে বলে—

— “তোমার কি মনে হয়… আমি আবার চলে যাব?”

— “না… শুধু ভয় হয়—যদি তুমি আমাকে পুরোটা না দাও…”

আবরার হাত ধরে।

— “আমার সবটুকুই তুমি।

তবে আমরা মানুষ, রাখি… আমরা ভাঙা হয়, গড়ি আবার।

ভালোবাসা শুধু কাছে আসা না…

ভালোবাসা হলো একসাথে থাকা শিখে যাওয়া।”

dream world

শেষের আগে এক সাদামাটা প্রার্থনা

দুজনেই একসাথে সিজদায় যায়।

একসাথে পড়তে থাকে:

“رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ…”

“হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আমাদের চোখের শান্তি দান করো…”

সিজদা ভিজে যায় অশ্রুতে।

তবে এবার সে অশ্রু—নতুন একটা জীবনের,

যেখানে ভালোবাসা আছে, বিশ্বাস আছে, আর সবচেয়ে বড় কথা—

আছে আল্লাহর জন্য একসাথে থাকা।


Click here....