- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
পর্ব – ১: 'আদুরে সে বিকেলটা'
বিকেলটা কেমন
জানো?
খুব
নরম।
আকাশে
মেঘের
ভেলা
ভাসছে,
হাওয়ার শীতল
পরশে
গাছপালা যেন
একটু
বেশিই
নড়ে
উঠছে।
বৃষ্টি
হয়নি,
তবে
হবে
হবে
করছে।
ঠিক
যেমন
কারও
চোখে
জল
আসে,
কিন্তু
ঝরে
না—তেমনি এক অব্যক্ত আবেগ
জমে
আছে
এই
বিকেলে।
নাজিয়া জানালার পাশে
দাঁড়িয়ে চা
হাতে
ভিজে
বাতাসটাকে উপভোগ
করছিল।
বুকের
গভীরে
একধরনের চিনচিনে অনুভূতি—অজানা
ব্যথা,
হয়তোবা দীর্ঘদিন ধরে
জমে
থাকা
কিছু
না
বলা
কথা।
হঠাৎ
মোবাইলে মেসেজের টুং
করে
একটা
শব্দ।
more...
রায়ান: "তুমি এখনো কি বিকেলগুলোকে একা উপভোগ করো?"
নাজিয়ার নিঃশ্বাস একটু
ভারী
হলো।
কত
বছর
পর
এই
ছেলেটা
আবার
মেসেজ
করলো?
চার
বছর!
চারটা
বছর
ধরে
কথা
নেই,
দেখা
নেই,
কোন
যোগাযোগ নেই।
অথচ
এই
একটা
মেসেজে
বুক
কাঁপছে,
হাত
কাঁপছে,
চোখ
ঝাপসা
হয়ে
আসছে।
তাদের
গল্পটা
শুরু
হয়েছিল ভার্সিটিতে। ইংরেজি
সাহিত্যের ক্লাসে
দুজনেই
ছিল
বইপাগল। তবে
নাজিয়া ছিল
অনেক
শান্ত,
গম্ভীর
আর
নিজের
জগতে
থাকা
এক
মেয়ে।
আর
রায়ান?
সে
ছিল
পুরোপুরি বিপরীত—হাসিখুশি, প্রাণবন্ত, তর্কপ্রিয়।
প্রথম
পরিচয়টা ক্লাসে
ইংরেজি
নাটকের
চর্চা
নিয়ে
এক
বিতর্কে।
— "শেক্সপিয়ারের প্রেম
বাস্তবের চেয়ে
অনেক
বেশি
আদর্শিক, তাই
সেটা
অনুসরণ
করলে
জীবন
কঠিন
হবে,"
বলেছিল
নাজিয়া।
— রায়ান
হেসে
বলেছিল,
"কিন্তু
কিছু
কিছু
প্রেম
আদর্শ
না
হলে
মানুষ
বাঁচবে
কী
করে?"
এই
উত্তপ্ত কথার
লড়াই
থেকেই
যে
এক
নতুন
আবেগ
জন্ম
নেবে—তা তারা কেউ
জানতো
না।
ধীরে
ধীরে
ক্লাসের বাইরেও
তাদের
কথা
শুরু
হলো,
বই
আদানপ্রদান, একসাথে
লাইব্রেরিতে বসা,
ক্যাফেটেরিয়ায় এক
কাপ
চা
ভাগ
করে
খাওয়া—সব মিলিয়ে একটা
বন্ধুত্ব তৈরি
হলো,
যার
ভেতর
লুকিয়ে ছিল
নিঃশব্দ ভালোবাসা।
কিন্তু
সমস্যাটা হলো—ওরা কেউই প্রথমে
অনুভব
করলো
না
যে
ওরা
একে
অপরকে
ভালোবেসে ফেলেছে। নাজিয়া সব
সময়
নিজের
ভেতরের
আবেগকে
দমিয়ে
রাখতো,
আর
রায়ান
ভেবেছিল, নাজিয়া তাকে
কখনোই
ভালোবাসবে না—তাই দূরে সরে
গিয়েছিল।
একটা
ছোট্ট
ভুল
বুঝাবুঝি ওদের
মাঝখানে পাহাড়
বানিয়ে দিয়েছিল।
একদিন
রায়ান
নাজিয়াকে তার
ক্লাসমেট রুমি’র সাথে দেখে
ভুল
বুঝে
ফেলে।
রুমি
ছিল
রায়ানের পুরনো
বন্ধু,
আর
হঠাৎ
একদিন
তাকে
কফিশপে
দেখে
নাজিয়া একটু
বেশিই
হাসিমুখে কথা
বলছিল।
সেই
মুহূর্তটাই রায়ান
দেখে।
কিছু
না
বলেই
সে
সরে
যায়।
এরপর
থেকে
ওরা
কথা
বলা
বন্ধ
করে
দেয়।
স্নাতক
শেষে
আলাদা
শহরে
চলে
যায়
রায়ান,
এবং
ধীরে
ধীরে
সব
বন্ধ
হয়ে
যায়।
শুধু
থেকে
যায়
কিছু
অপূর্ণতা, না
বলা
ভালোবাসা, আর
একরাশ
অভিমান।
আজ
এতদিন
পর
সেই
অভিমানের দেয়াল
ভেঙে
রায়ান
হঠাৎ
মেসেজ
করলো!
নাজিয়া ধীরে
ধীরে
টাইপ
করলো—
"তুমি হঠাৎ কেন কথা বলছো?"
মিনিট
দুই
অপেক্ষার পর
রিপ্লাই আসে—
"কারণ সেই বিকেলটা
আজও আমার কাছে আটকে আছে, যেদিন তোমার চোখে আমি অন্য কারো প্রতিচ্ছবি দেখেছিলাম।"
নাজিয়া অবাক!
এত
বছর
পরও
রায়ান
সেই
দিনের
কথা
মনে
রেখেছে?
সে
কি
জানে,
সেদিন
রুমি
আসলে
নাজিয়ার বেস্ট
ফ্রেন্ডের ভাই?
সে
কি
জানে,
রুমি
আসলে
এসেছিল
একটা
উপন্যাস উপহার
দিতে,
যেটা
রায়ান
আর
নাজিয়ার প্রিয়
ছিল?
সে
কি
জানে—সেদিন নাজিয়া কফির
কাপে
দুটো
স্ট্র
দিয়েছিল, একটাতে
সে
নিজে
চুমুক
দেয়নি,
অপেক্ষা করছিল
যদি
রায়ান
আসে...
তবু
সে
চায়
না
হুট
করে
পুরনো
অতীত
আবার
খুলে
বসতে।
তাই
সে
ছোট্ট
একটা
উত্তর
দেয়—
"সব বিকেল এক রকম হয় না। কিছু বিকেল ঝড়ের মতো আসে, কিছু রোদে গলে যায়।"
রায়ানের রিপ্লাই আসে
সাথে
সাথে—
"এই বিকেলটা
আমি ফিরিয়ে আনতে চাই, নাজু। যদি তোমার মনের কোণেও আমার জন্য একটুখানি ভালোবাসা বেঁচে থাকে, তাহলে... চল আবার শুরু করি। ভুলগুলো নিয়ে, দুঃখগুলো রেখে, নতুন করে।"
নাজিয়ার হৃদয়
টনটন
করে
উঠলো।
এতদিনের নিরবতা,
একা
একা
আকাশের
দিকে
তাকিয়ে রাত
পার
করে
দেওয়া,
সেই
পুরনো
গানগুলো শুনে
চোখ
ভিজিয়ে ফেলা—সব কিছু যেন
আবার
নতুন
করে
ফিরে
এলো।
কিন্তু
সে
কি
পারবে
সব
কিছু
ভুলে
যেতে?
যে
মেয়েটা এত
বছর
একা
ছিল,
একটা
ভুল
বুঝাবুঝির জন্য
পুরো
সম্পর্কটা ছেড়ে
দিয়েছিল, তার
পক্ষে
কি
এত
সহজ
হবে
আবার
ফিরে
যাওয়া?
ঠিক
সেই
সময়ে
তার
ঘরে
মা
ঢুকে
পড়লেন।
— "নাজু, ফোনে কার
সাথে
কথা
বলছিলি?
মুখটা
তো
লাল
হয়ে
আছে!"
— "না, মা... এমনিই।
আবহাওয়াটা একটু
নস্টালজিক না?"
মা
হেসে
চলে
গেলেন।
কিন্তু
নাজিয়ার মনটা
ঝড়ের
মতো
উথালপাথাল।
রাত
হয়ে
এসেছে।
আকাশে
আজও
তারা
নেই,
শুধু
মেঘ,
আর
অন্ধকার। মোবাইল
স্ক্রিনে এখনো
জ্বলছে
রায়ানের শেষ
মেসেজটা।
"একবার শুধু বলো, তুমি কি আরেকটা
সুযোগ দেবে আমাকে?"
নাজিয়া কিছু
লিখলো
না,
শুধু
জানালাটা খুলে
দিল।
হাওয়াটা ভেতরে
ঢুকে
পড়লো।
ঠিক
যেমন
করে
এক
পুরনো
স্মৃতি
আবার
বুকের
ভেতরে
ঢুকে
পড়ে—অনুমতি ছাড়াই।
পর্ব – ২: 'ফিরে আসার অসমাপ্ত সাহস'
রাতটা
কেটেছে
নির্ঘুম।
জানালার পাশে
বসে
নাজিয়া একটার
পর
একটা
স্মৃতি
রিওয়াইন্ড করেছে।
পুরনো
ছবিগুলো স্ক্রিনে টেনে
এনেছে,
রায়ানের কণ্ঠে
পাঠানো
সেই
শেষ
ভয়েস
মেসেজটা বারবার
শুনেছে। সেই
হাসিটা,
সেই
ডাকে
“নাজু”…
কোথায়
যেন
একটা
ফাঁকা
জায়গা
কাঁপে
কাঁপে
জেগে
উঠছে।
কিন্তু
একটা
প্রশ্ন
মাথা
থেকে
নামছে
না
— "সে হঠাৎ এখন কেন ফিরলো?"
ভালোবাসা তো
অনেকেই
ফিরে
চায়।
কিন্তু
কেউ
কি
সত্যি
ফিরে
আসে
আগের
মতো?
সকালে
ঘুম
ভাঙতেই
আবার
মেসেজ—
রায়ান: “আজ সন্ধ্যায় দেখা
করতে
পারবে?
একটা
কথা
আছে,
যেটা
বলা
খুব
দরকার।
দেখা
না
করলে
তুমি
পুরো
সত্যিটা জানবে
না।”
নাজিয়া স্ক্রিনের দিকে
তাকিয়ে
থাকে
কিছুক্ষণ। দেখা
করবে?
আবার?
যদি
আবার
কষ্ট
পায়?
যদি
এই
ফেরাটা
আসলে
তার
জন্য
নয়,
বরং
তার
অনুভূতিকে ব্যথা
দেবার
আরেকটা
ফাঁদ
হয়?
তবু
একটা
অদ্ভুত
টান
আছে।
যেমন
পুরনো
বইয়ের
শেষ
পাতাটা
না
পড়লে
শান্তি
মেলে
না—তেমন এক অজানা
মোড়ের
অপেক্ষা।
সন্ধ্যা, ধানমন্ডি লেকের পাশের কফিশপ
সেই
কফিশপ
যেখানে
একদিন
ওদের
প্রথম
“আনঅফিশিয়াল ডেট”
হয়েছিল।
মেঘলা
আকাশ,
হালকা
বৃষ্টি
পড়ছে,
রাস্তার বাতিগুলো অদ্ভুত
মায়া
ছড়াচ্ছে। ভিতরে
রায়ান
বসে
আছে—একটু বদলে গেছে
চেহারা। গোঁফদাড়ি বড়
হয়েছে,
চোখে
যেন
গভীরতা
এসেছে।
নাজিয়া ঢুকতেই
ও
চোখ
তুলে
তাকালো।
চোখে
সেই
পুরনো
উষ্ণতা,
কিন্তু
মুখে
চাপা
গম্ভীরতা।
— "তুমি এসেছো... ধন্যবাদ," বললো রায়ান।
— "শুধু একটা উত্তর
জানার
জন্য,"
নাজিয়া শান্ত
কণ্ঠে
বললো।
"কেন
এখন?"
রায়ান
চুপ।
একটু
মাথা
নিচু
করে
বললো—
— "সত্যি বলতে... আমি
চার
বছর
আগে
একটা
ভুল
করেছিলাম। খুব
বড়
ভুল।
আর
সেটার
শাস্তি
আমি
প্রতিদিন পেয়েছি।"
নাজিয়া চমকে
তাকালো।
— "তুমি তো চুপচাপ
চলে
গেলে!
একটা
কথাও
বললে
না!
এমনকি
আমি
চেয়েও
তোমাকে
পাইনি...
ফোন
বন্ধ,
নম্বর
অফ,
এমনটা
করলে
কেন?"
রায়ান
এবার
একটু
ঝাপসে
চোখে
তাকালো।
— "কারণ… আমি ভুল
বুঝেছিলাম তোমায়। রুমি
আর
তোমার
সেই
ছবি
দেখে
মনে
হয়েছিল, তুমি
আমাকে
নিয়ে
সিরিয়াস ছিলে
না।
আমি
ভেবেছিলাম আমি
ভুল
মানুষকে ভালোবেসেছি। আমার
অহংকার
আমায়
চেপে
ধরেছিল…
তোমার
ব্যাখ্যা শোনার
মতো
ধৈর্যও
ছিল
না
তখন।"
নাজিয়া ফোঁপাচ্ছে না,
চিৎকারও করছে
না।
শুধু
ঠোঁট
চাপা
দিয়ে
শুনছে।
— "তারপর?"
— "তারপর
আমার
জীবনে
কিছু
ঘটলো...
এমন
কিছু,
যেটা
বললে
হয়তো
তুমি
আরও
কষ্ট
পাবে,
কিন্তু
তোমার
জানাটা
জরুরি।"
নাজিয়া ভ্রু
কুঁচকে
তাকালো।
— "আমি একবার বিয়ের
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম…" রায়ান বলতে
লাগলো,
"মা
অনেক
জেদ
করছিল।
আমি
মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলাম
তখন,
কাউকে
ধরার
মতো
একটা
কাঁধ
খুঁজছিলাম। সেই
সময়
একটা
মেয়ের
সঙ্গে
বিয়ের
প্রস্তাব এল।
আমি
রাজি
হয়ে
যাই…"
— "তাহলে... তুমিতো...!"
— "না,"
রায়ান
মাথা
নাড়ে।
"বিয়ে
হয়নি।
কারণ
ঠিক
আগের
রাতে
আমি
ঘুমের
মধ্যে
তোমার
নাম
ধরে
কেঁদে
উঠি।
এবং
সেই
মেয়েটাই আমাকে
বলেছিল,
'তুমি
অন্য
কাউকে
ভালোবাসো, আমাকে
ভালোবাসা হবে
না।'
আমি
থেমে
যাই।"
একটা
দীর্ঘ
নিঃশ্বাস পড়ে
দুজনের
মাঝখানে।
— "কিন্তু তবুও চার
বছর?
এত
দীর্ঘ
নীরবতা?
আমি
কি
কিছুই
বুঝতে
পারতাম
না?"
নাজিয়ার গলা
বেদনায়
কাঁপে।
রায়ান
এবার
আস্তে
বললো,
— "আমি
জানতাম
না
তুমি
এখনো
আমায়
মনে
রাখো
কিনা।
আমি
নিজেই
তো
জানতাম
না,
আমি
কতটা
কাঁদতাম তোমার
জন্য।
একটা
ঘটনা
না
ঘটলে
আমি
হয়তো
আজও
আসতাম
না…"
নাজিয়া কিছু
বলার
আগেই
রায়ান
বললো—
— "গত মাসে আমি
একটা
দুর্ঘটনায় পড়ি।
প্রায়
মৃত্যুর মুখ
থেকে
ফিরে
এসেছি।
সেই
সময়
আমার
চোখের
সামনে
একটাই
মুখ
বারবার
ভেসেছে—তোমার মুখ। আমি
বুঝেছি,
বেঁচে
থাকলেও
যদি
তোমায়
না
বলতে
পারি,
তাহলে
আমার
এই
জীবনটাই অপূর্ণ
থেকে
যাবে।"
একটা
ভারী
নীরবতা। চারপাশে হালকা
বৃষ্টি,
কফিশপের হালকা
জ্যাজ
মিউজিক,
আর
দুইটা
মানুষের দৃষ্টিতে জমে
থাকা
দীর্ঘশ্বাস।
নাজিয়া উঠে
দাঁড়ালো।
রায়ান
ভয়
পেল—সে কি চলে
যাবে?
— "তুমি এখনো জানো
না
রায়ান,
ভালোবাসা মানে
শুধু
ফিরে
আসা
না।
সেটা
আবার
বিশ্বাস করতে
শেখা।
আমি...
আমি
জানি
না
পারবো
কিনা।
কিন্তু..."
— ও
থামলো,
— "তোমার
কথা
শুনে
আজ
এতদিন
পরে
আমার
বুক
হালকা
লাগছে।
আমি
কথা
দিচ্ছি,
আমি
চেষ্টা
করবো...
আবার
সব
কিছু
বোঝার,
জানার,
আর
নিজেকে
খোলার।"
রায়ানের চোখ
চকচক
করে
উঠলো।
— "তবে একটা শর্ত
আছে,"
নাজিয়া বললো
হেসে,
— "আর
কোন
ভুল
বুঝলে,
আগে
আমাকে
জিজ্ঞেস করবে।
পালিয়ে যাবে
না।"
রায়ান
দাঁড়িয়ে ওর
দিকে
হাত
বাড়িয়ে দিলো।
— "শপথ।
আর
কোন
পালানো
না।"
দুজনের
মাঝখানে বাতাসটা যেন
হালকা
হয়ে
গেল।
হয়তো
সব
কিছু
আগের
মতো
হবে
না,
কিন্তু
এবার
তারা
একসাথে
চেষ্টা
করবে।
Tap here...
পর্ব – ৩: 'তৃতীয় ছায়া'
সময়টা
কেমন
যেন
ছিমছাম
হয়ে
গেছে।
রায়ান
আর
নাজিয়া
এখন
একসাথে
অনেক
কিছু
ভাগ
করে
নেয়—কফির কাপ থেকে
শুরু
করে
গল্পের
টুকরো
স্মৃতি,
এমনকি
অতীতের
কষ্টগুলোও। তবে
"সম্পূর্ণ একসাথে"
বলা
যাবে
না।
একটা
দূরত্ব
এখনো
রয়ে
গেছে,
একটা
নিঃশব্দ প্রাচীর, যেটা
কেউ
ভাঙতে
পারছে
না।
রায়ান
নাজিয়াকে আগের
মতো
ভালোবাসে, আরও
বেশি
হয়তো।
নাজিয়াও চেষ্টা
করছে,
কিন্তু
মনে
একটা
ভয়—“যদি আবার ভেঙে পড়ে?”
ঠিক
তখনই
আসলো
সে।
রায়ানের জীবনের
এক
পুরনো
পরিচিত,
নাম
আদিবা।
একটি অফিস ইভেন্ট
রায়ান
এখন
কর্পোরেট লাইফে
স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে গেছে।
বড়
একটি
ফার্মে
সাপ্লাই চেইন
ম্যানেজার। অফিসের
দশ
বছর
পূর্তির একটি
অনুষ্ঠান চলছে।
নাজিয়াকে সে
আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
নাজিয়া
শাড়ি
পরে
এসেছে,
মেরুন
রঙা
গলায়
ছোট্ট
একটি
টিপ—রায়ান চেয়ে আছে
অবাক
হয়ে।
সে এখনো এতটা সুন্দর, এতটা পরিপূর্ণ... আমারই তো!
কিন্তু
তারপরই
হঠাৎ
দেখা
গেল
আদিবাকে।
একটা
ঘন
নীল
গাউন
পরে,
অতিরিক্ত হাই
হিল,
লিপস্টিকে বিষাক্ত উজ্জ্বলতা—এক
নজরেই
বোঝা
যায়,
সে
কারও
দৃষ্টি
কাড়তে
এসেছে।
— "রায়ান! হে গড!
তুমি?
এতদিন
পর!"
— "আদিবা?"
রায়ান
একটু
থমকে
যায়।
নাজিয়া
তখন
পাশে।
রায়ান
দ্রুত
বললো,
"আদিবা,
এই
নাজিয়া। আমার…"
— "ও আচ্ছা! তোমার
পুরনো
প্রেমিকা, তাই
না?"
আদিবা
বলে
হেসে
উঠলো।
সবাই
তাকালো। নাজিয়ার মুখ
পড়ে
গেল।
রায়ান
বললো,
"না,
এখনকার
ভালোবাসা। এবং
আগামীর,
ইনশাআল্লাহ।"
কিন্তু
নাজিয়ার মনে
খচখচানি শুরু
হয়ে
গেল।
আদিবা
যে
হালকা
কথা
বলেছিল,
সেটা
সে
হাসতে
হাসতেই
বলেছে,
কিন্তু
তাতে
ছিল
একরাশ
বিষ—একটা নারী আরেক
নারীকে
বুঝিয়ে
দিতে
চায়,
“আমি তোমার অতীত জানি, সাবধান!”
CLICK HERE FOR MORE.......
পরদিন, নাজিয়ার মনের ভেতরে
— “তুমি আগে
কখনও
আমাকে
আদিবার
কথা
বলোনি
কেন?”
— “ও
তো
কেবল
একজন
পুরনো
পরিচিত। ইউনিতে
একসাথে
পড়তাম,
একটু
ঘনিষ্ঠ
ছিলাম,
কিন্তু
কখনো
রিলেশন
হয়নি।”
— “তবু
ওর
চোখে
কিছু
ছিল,
ওর
কথায়
কিছু
ছিল…
আমি
তো
বুঝতে
পারি।”
রায়ান
চুপ।
নাজিয়া
এবার
একটু
রাগ
নিয়ে
বললো—
— “আমি
ভয়
পাই
রায়ান…
যদি
তোমার
জীবনে
এমন
কেউ
ঢুকে
পড়ে,
যে
আমার
চেয়েও
বেশি
জানে
তোমায়,
তাহলে
আমি
কোথায়
দাঁড়াব?”
— “তুমি ভুল
ভাবছো।”
— “ঠিক
তেমনি
একদিন
আমি
ভুল
বুঝেছিলাম, আর
তুমি
চলে
গিয়েছিলে…”
— “এবার
আমি
যাচ্ছি
না,
আমি
লড়ে
যাব।”
রায়ানের চোখে
স্পষ্ট
প্রতিজ্ঞা। কিন্তু
দূর
থেকে
সেই
প্রতিজ্ঞাকে নীরবে
দেখে
যায়
কেউ—আদিবা।
আদিবার পরিকল্পনা শুরু
পরের
এক
সপ্তাহে বারবার
দেখা
যায়
আদিবাকে—অফিসে,
পার্টিতে, এমনকি
একদিন
নাজিয়ার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির গেটের
সামনেও।
মুখে
হাসি,
হাতে
চকোলেট,
চোখে
প্রতিযোগিতা।
রায়ান
বিরক্ত
হলেও,
আদিবা
স্লিপ
গেম
খেলছে।
সোজাসাপ্টা কিছু
বলছে
না,
কিন্তু
মাঝে
মাঝে
এমন
কথা
বলে
যা
নাজিয়ার মনে
কাঁটা
গেঁথে
দেয়।
"তোমার তো
এখনকার
ফ্যাশনের সাথে
একটু
কনফিডেন্স দরকার
রে
নাজু!"
"রায়ান
আগে
এসব
খেতে
পারতো
না,
এখন
তো
অনেক
বদলে
গেছে।"
নাজিয়া
হাসে,
কিন্তু
চোখে
জল
জমে।
সে
বুঝে
যাচ্ছে,
আদিবা তার দুর্বলতার জায়গাটা ধরে ফেলেছে—রায়ানকে হারানোর ভয়।
একদিন
রাতে
সে
চুপচাপ
বললো
রায়ানকে—
— “তুমি
কি
আজকাল
আদিবার
সঙ্গে
বেশি
দেখা
করো?”
রায়ান
অবাক—“তুমি এমন ভাবছো
কেন?”
— “কারণ
তুমি
এখন
আমার
চোখের
দিকে
কম
তাকাও,
ফোনে
মাঝে
মাঝে
বিরক্ত
হয়ে
কথা
বলো,
আর
তার
ঠিক
পরেই
দেখি
ওর
একটা
ইনস্টাগ্রাম স্টোরি
যেখানে
তুমিই
ক্যামেরার পেছনে...”
রায়ান
এবার
রেগে
গেল।
— “তুমি আবার
সন্দেহ
শুরু
করলে?”
— “তুমি
আবার
ভুল
বোঝানোর সুযোগ
দিচ্ছো।”
নাজিয়া
কাঁদতে
লাগলো।
রায়ান
একদম
চুপ
হয়ে
গেল।
অতীতের
ছায়া
যেন
আবার
ছুঁয়ে
গেল
দুজনকে।
পর্ব – ৪ (শেষ পর্ব): 'এক চিঠি, এক ফিরে আসা'
চোখে জল, হাতে চিঠি
নাজিয়া
অনেক
দিন
ধরে
রায়ানের সঙ্গে
কোনো
যোগাযোগ রাখেনি। একটা
ভাঙা
আত্মবিশ্বাস, একরাশ
অভিমান
আর
মনে
জমে
থাকা
প্রশ্নগুলো ওকে
চুপ
করে
রেখেছে।
আদিবার
ছলচাতুরীতে তৈরি
হওয়া
মিথ্যে
স্ক্রিনশট, যেখানে
রায়ানকে একটা
রুমে
দেখা
যাচ্ছিল আদিবার
সঙ্গে,
নাজিয়ার বুক
ভেঙে
দিয়েছিল।
সে
চিৎকার
করেনি।
শুধু
বলেছিল,
— “আমি
তোমাকে
বিশ্বাস করেছিলাম… কিন্তু
আমার
বিশ্বাসই বারবার
ভুল
প্রমাণিত হচ্ছে।”
রায়ান
অনেক
বোঝানোর চেষ্টা
করেছিল,
— “তুমি
জানো,
আমি
কখনোই
ওর
সঙ্গে
এমন
কিছু
করিনি!
ও
ইচ্ছা
করে…
ফটোশপ
করেছে…”
— “সাবধান
হও,
রায়ান।
আদিবা
তোমার
অতীত,
কিন্তু
ও
জানে—তোমার ভবিষ্যতেও জায়গা
নিতে
হলে
কোন
বাঁশিটা বাজাতে
হবে।”
নাজিয়ার ঠোঁটে
তিক্ত
হাসি।
সেদিন
থেকেই
দুজন
আলাদা
হয়ে
যায়।
more.....
রায়ান, একা
রায়ান
নাজিয়ার ফোনে
বারবার
মেসেজ
করেছে।
চিঠি
পাঠিয়েছে বাসার
ঠিকানায়।
কিন্তু
কোনো
উত্তর
আসেনি।
সেই
চিঠিগুলোর একটাও
ফিরিয়ে
দেয়নি
নাজিয়া,
কিন্তু
খুলেও
দেখেনি।
তারপর
একদিন,
হঠাৎ
করে
বসে
বসে
সে
সেই
শেষ
চিঠিটা
খুলে
ফেলে।
হাতে
তুলে
নেয়
রায়ানের অক্ষরভরা হৃদয়।
“তুমি জানো
নাজিয়া,
ভালোবাসা কখনো
কখনো
খুব
নিঃশব্দ হয়।
আমাদের
দুজনের
মাঝেও
তো
একটা
নীরব
ভালোবাসা ছিল।
আমি
কখনো
নিখুঁত
ছিলাম
না,
কিন্তু
চেষ্টা
করেছিলাম তোমার
মতো
একজনকে
ধরে
রাখতে,
যে
বিশ্বাস করে,
যে
ভালোবাসে…
আমি
হেরে
গেছি
তোমার
ভুল
বোঝাবুঝির কাছে,
আদিবার
চালাকি’র কাছে না।
যদি
কখনো
মনে
হয়,
আমি
সত্যি
তোমার
ছিলাম,
তাহলে
ফিরে
এসো,
কারণ
আমার
হৃদয়ের
দরজা
কখনো
বন্ধ
হয়নি
তোমার
জন্য।”
নাজিয়া
চুপচাপ
কাঁদছিল।
প্রথমবারের মতো,
সে
চিঠির
অক্ষরগুলোকে ছুঁয়ে
বললো—
— “তুমি
তো
আমাকেই
ভালোবাসতে… আর
আমি
কেবল
ভয়
পেয়ে
সব
হারিয়ে
ফেললাম।”
সেই
বিকেলটা ছিল
ভেজা।
রায়ান
অফিস
থেকে
ফিরে
নিজের
পুরোনো
নোটবুকগুলো ঘাটছিল।
হঠাৎ
ডোরবেল।
দরজা
খুলে
দেখে,
নাজিয়া।
চোখে
কajal,
ঠোঁটে
কোনো
কথা
নেই,
কেবল
হাতে
সেই
চিঠিটা।
— “আমি আসতে
দেরি
করে
ফেলেছি?”
— “না…
আমার
জীবন
এখন
শুরু
হলো।”
রায়ান
কাছে
এগিয়ে
গেল।
— “তুমি ফিরেছো
কেন?”
— “কারণ
তোমার
লেখা
চিঠিটা
আমি
শুধু
পড়িনি,
অনুভব
করেছি।”
— “এতদিন তুমি
কষ্ট
পেয়েছো…
বিশ্বাস হারিয়েছো… তবুও
ফিরলে?”
— “কারণ
আমি
বুঝেছি,
তুমি
চলে
যাওয়ার
মতো
মানুষ
না।
আমি
তোমাকে
ঠেলে
দিয়েছিলাম।”
রায়ানের চোখ
ভিজে
গেল।
— “তাহলে এবার
কথা
দাও,
আর
কোনো
ভুল
বোঝাবুঝি আমাদের
দূরে
পাঠাবে
না।”
— “কথা
দিচ্ছি। এবার
আমরা
একসাথে
লড়ব।
ভুলের
বিরুদ্ধে, তৃতীয়
মানুষের ছায়ার
বিরুদ্ধে… আমাদের
ভালোবাসার জন্য।”
🎯 শেষ সংলাপ:
"ভালোবাসা হারিয়ে
যায়
না...
এটা
শুধু
একটু
সাহস
চায়—ফিরে আসার।"
শেষ টুইস্ট (Epilogue):
বিয়ের
কয়েক
মাস
পর,
এক
পারিবারিক গেটটুগেদারে রায়ান
হেসে
বললো—
— “তুমি জানো
নাজু,
আদিবা
পরে
সত্যি
অ্যাডমিট করেছিল
যে
ছবি
ফেক
ছিল।”
— “জানি।”
— “তুমি
জানো,
তুমি
তখনই
মাফ
করে
দিয়েছিলে আমায়?”
— “তোমাকে
নয়
রায়ান,
আমি
নিজেকে
মাফ
করেছিলাম…
ভালোবাসা যে
কেবল
বিশ্বাস নয়,
সাহসও—তা বুঝে গিয়েছিলাম।”
✨
THE END ✨
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ